ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় অবশেষে ধরা পড়ল প্রতারক ‘মফিজ’

atok,পেকুয়া প্রতিনিধি ::

পেকুয়ায় অবশেষে জনতার হাতে ধরা পড়ল সেই প্রতারক মফিজ (৪০)। ঘটকালি করে বিয়ে ঠিক করার কথা বলে শত শত পরিবারের কাছ থেকে কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এরই মধ্যে নিজকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছে অর্ধশতাধিক মেয়েকে। ওই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে কপাল পুড়েছে অনেক মেয়ের। কুমারীত্ব হারিয়েছে ওই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে অনেক স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রী। নিজেকে একেক জায়গায় একেক পরিচয় দিয়ে এপর্যন্ত অনেক নারীকে সর্বনাশ করেছে ওই প্রতারক। কনেদের নকল পাত্র দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অংকের টাকা। তার দুর্দান্ত প্রতারনার কারনে বহু প্রবাসির স্ত্রীর ভেঙ্গেছে সংসার। বিয়ের পাশাপাশি সর্বশান্ত করেছে মেয়ের পরিবারকে। তার সীমাহীন প্রতারনায় মানুষ অতিষ্ট ছিল। এরইমধ্যে প্রতারনার দায়ে আটক হয়েছে একাধিকবার। আইনের ফাঁকফোকরে বেরিয়ে ফের জড়িয়ে পড়েন প্রতারনায়। সর্বশেষ গত ১৫দিন আগে আরেকটি অভিনব প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় ৫৫ হাজার টাকা। আর্মি ভাইয়ের জন্য পাত্রী ঠিক করে। এসময় যৌতুক হিসেবে ওই টাকা বড়ভাই পরিচয় দিয়ে কৌশলে নিয়ে নেয় ওই মফিজ। চট্টগ্রাম জেলার বাশখালীর দক্ষিন পুইছড়ি এলাকার জনৈক ইসমাইলের কিশোরী কন্যার সাথে বিয়ে প্রতারনায় সর্বশেষ গত শনিবার রাতে জনতার হাতে ধরা পড়েন প্রতারক মফিজ। এসময় তাকে স্থানীয়রা পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান এম.বাহাদুর শাহের নিকট সোপর্দ করেন। চেয়ারম্যান প্রতারক মফিজকে পরদিন রবিবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে থানা পুলিশের কাছে সৌপপর্দ করেছেন। জানাগেছে, মফিজ উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়নের জালিয়াখালী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। ওইদিন স্থানীয়রা তাকে নিজ বাড়ি থেকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। সদর ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আরিফুল ইসলাম জানায়, মফিজ একজন দুর্দান্ত প্রতারক। গত কিছুদিন আগে রাজাখালীর এক মেয়ের পরিবার থেকেও বিয়ে ঠিক ফর্দ্দ করে ৭০ হাজার টাকা নেয়। এরপর তাকে অনেকদিন খোঁজাখুজির পর তারা চট্টগ্রাম শহর থেকে আটক করে পরিষদে দেয়। রাতে তালা ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। অনেক মেয়ের স্বপ্ন চুরমার করেছে সে। জানা গেছে মুফিজ চকরিয়ার ফাশিয়াখালী থেকে দু’বান্ধবীকে বিয়ে করে। অবিবাহিত ও নিজেকে সৌদি প্রবাসি পরিচয়ে দুর্ধান্ত প্রতারনার জাল ফাদে একই স্থান থেকে কয়েক দিনের ব্যবধানে দু’বান্ধবীকে বিয়ে করেন। এর পর একটি অনুষ্টানে যোগ দিতে গিয়ে জানা জানি হয় দু’জনের স্বামী একজন। আর সে হচ্ছেন ওই প্রতারক মুফিজ। ওই ঘটনায় মুফিজকে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে দেয় প্রতারিত দু’বান্ধবী। জালিয়াখালীর আলতাফ উদ্দিন জানায় মুফিজ মহেশখালী মাতারবাড়ি থেকে চিংড়ি প্রজেক্টে লোক পাঠানোর কথা বলে ৪০হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর প্রতারিতরা তাকে খোঁজাখুজি করেছে। চৌকিদার নুর মুহাম্মদ জানায় স্কুল ছাত্রীর কাছ থেকে মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেয়। পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান এম.বাহাদুর শাহ বলেন, মফিজ করে নাই এমন প্রতারনা আমার জানা নাই। মেয়ে নষ্ট ও নকল পাত্র দেখিয়ে অনেক পরিবারের কাছ থেকে সে কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এলাকার কোন মানুষ তার দায় নিতে চায়না। কত মানুষকে কপাল পুড়িয়েছে এর কোন ইয়াত্তা আমার জানা নেই। তাকে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত। যাতে করে আর কোন মানুষের ক্ষতি সাধিত না করতে পারে।

পাঠকের মতামত: